আবারও রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত
চাঁদপুরে আবারও রেলওয়ের অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর পূর্বে গত ৩০ নভেম্বর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্যে রেলওয়ে এস্টেট বিভাগের পক্ষ থেকে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু জেলা ইজতেমার কারণে চাঁদপুরের প্রশাসন থেকে চাহিদা মতো ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ দিতে অপারগতায় তখনও অভিযান করতে পারেনি রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম থেকে আসা রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ইসরাত রেজা তাঁর উচ্ছেদকারী দল ও সরঞ্জামাদি নিয়ে আসলেও পরে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেয়ে চলে যান।
এদিকে এ উচ্ছেদ অভিযানের কথা অনেক আগ থেকে মাইকিং করায় চাঁদপুরে রেলওয়ের শত-শত অবৈধ দখলদারদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছিলো। তারা গত রোববার রাত থেকে শুরু করে গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত শহরের ওয়্যারলেছ মোড়, মিশন রোড, বঙ্গবন্ধু সড়ক, ছায়াবাণী মোড়, কোর্ট স্টেশন এলাকা, বকুলতলা, আক্কাছ আলী এলাকা, বড় স্টেশন এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানের ২ শতাধিক অস্থায়ী অবৈধ স্থাপনা নিজেদের উদ্যোগে সরিয়ে নেয়। তবে রেলওয়ের ওই উচ্ছেদকারী দল চলে যাওয়ার পর পরই অবৈধ দখলদাররা তাদের দোকানপাট পুনরায় বসাতে শুরু করে। চাঁদপুরে রেলওয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করার নির্দেশনা ২ দফা প্রদান করা হলেও অবশেষে গতকাল সে অভিযান রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বন্ধে করে দেয়া হয়েছে বলে রেলওয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ইসরাত রেজার সাথে কথা বললে তিনি জানান, চাঁদপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্যে এসেছিলাম। হঠাৎ রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছেন, চাঁদপুরের স্থানীয় সংসদ সদস্যকে এ বিষয়ে অবগত করানো হয় নি বিধায় এ দফাও উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকবে। এদিকে ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ইসরাত রেজা ও তাঁর সাথে আসা অন্যান্য কর্মকর্তা বড় স্টেশন পাইলট হাউজ ও পুরাতন নৌ-টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁরা মন্তব্য করেন- বিআইডবিস্নউটিএ কর্তৃর্ক রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে যে দখল করা হয়েছে সে স্থান আমরা দেখলাম এবং সে স্থানের জায়গা মেপে নিয়ে গেলাম পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্যে।
গতকাল সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের হাজীগঞ্জ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত রেল লাইনের ২ পাশে ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলো রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষ। এদিকে রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণকারীদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে। এ রিটের কপি ১০ ডিসেম্বর রোববার পর্যন্ত চট্টগ্রাম ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে পেঁৗছেনি। গতকাল সোমবার মুঠোফোনে রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষের সাথে এ প্রতিনিধি যোগাযোগ করলে তারা জানান, চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেছ, বিশ্বরোড রেলক্রসিং এলাকা, মিশন রোড, চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন, শহরের বকুলতলা, আক্কাস আলী রেলওয়ে এলাকা ও চাঁদপুর স্টেশন এলাকায় রেল লাইনের দুপাশে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শত শত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সকল সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করার জন্যে চিঠি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্লাহর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা উচ্ছেদের চিঠি পেয়েছি। আমরা অন্য জায়গা থেকে বাড়তি ফোর্স এনেছি। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে নেবো।
চাঁদপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ উছমান গনি পাঠানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি অফিসিয়ালভাবে চিঠি পেয়েছি। সোমবার উচ্ছেদের প্রোগ্রাম দেয়া আছে, আমরা প্রস্তুত ছিলাম। লাকসামের ভারপ্রাপ্ত কানুনগো আবু সাঈদ পাটোয়ারী বলেন, আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।