একজন বাদে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্য কাজ করবো
শাহরাস্তিতে আওয়ামী লীগের চার মনোনয়ন প্রত্যাশী এক মঞ্চে এসে ‘এক ব্যক্তি ছাড়া অন্য যে কাউকে মনোনয়ন দেয়ার’ জোর দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী পরিবারের উদ্যোগে বিশাল র্যালী ও আলোচনা সভায় ওই চার মনোনয়ন প্রত্যাশী এক মঞ্চে এসে এ ঘোষণা দেন। এঁরা হচ্ছেন : ইঞ্জিঃ মোহাম্মদ হোসেন, অধ্যাপক একেএম ফজলুল হক, ইঞ্জিঃ মোঃ সফিকুর রহমান ও শফিকুল আলম ফিরোজ। এদিন সকাল ১১টায় স্থানীয় কালিয়াপাড়া বাজার এলাকায় র্যালী পূর্বক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ূন কবির মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক রেজাউল করিম মিন্টুর সঞ্চালনায় এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসন থেকে আওয়ামী লীগের তিন মনোনয়ন প্রত্যাশী।
মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও বর্তমান চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যাপক একেএম ফজলুল হক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ২০ বছর যাবৎ আমরা পাথরের নিচে চাপা পড়ে আছি। আমাদের কীসের ভয়? আমরা নাকে খত দিয়ে রাজনীতি করি না। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কার কথায় নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছেন? তিনি সারাজীবনের জন্য আসেন নি। আমরা এক ব্যক্তি ছাড়া অন্য যে কাউকে মনোনয়ন দিতে নেত্রীর কাছে যাবো। আমার বয়স হয়েছে কিন্তু শক্তি আছে। আমরা সবাই মনোনয়ন চাইবো।
অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিঃ মোঃ সফিকুর রহমান বলেন, যারা বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে নির্যাতিত হয়েছেন আজ আমাদের সরকারের আমলেও তারা নির্যাতিত হচ্ছেন। বিগত ইউপি, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনে আমাদের কোনো প্রার্থী কেনো নির্বাচিত হতে পারে নি তার জবাব ১৯ সালের নির্বাচনে আপনারা নেবেন। তিনি বলেন, ২০৪১ সাল পর্যন্ত নৌকাই হবে উন্নয়নের প্রতীক। আমরা ঐক্যের পতাকাতলে আছি। আজ থেকে আমাদের কোনো নেতা-কর্মী হয়রানি হলে আমরা সকলে মিলে ব্যবস্থা নেবো।
সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী বলেন, নেতারা বার বার আওয়ামী লীগের সাথে বেঈমানি করেছে কিন্তু তৃণমূল কখনো বেঈমানি করে নি। শেখ হাসিনার আস্থার জায়গা তৃণমূল। জননেত্রীকে আল্লাহ বাঁচিয়েছেন জনগণের দোয়ায়। জননেত্রী যাকেই নৌকা দেবেন আমরা তাঁকে ভোট দেবো। আপনারা আপনাদের চাহিদার কথা পাঠিয়ে দিবেন, জননেত্রী আপনাদের কথা রাখবেন। আমি চাঁদপুর জেলার পাঁচটি আসন পাওয়ার জন্যে কাজ করবো।
আরো এক মনোনয়ন প্রত্যাশী পাওয়ার সেলের ডিজি ইঞ্জিঃ মোহাম্মদ হোসেন বলেন, গত ২০ বছর শাহরাস্তি বাসি ভীতিতে ছিল। আগামীতে কোনো রক্তচক্ষুকে ভয় পাবো না। এ মঞ্চে আজ যারা উপস্থিত রয়েছেন তাঁদের মধ্যে জাতির জনকের কন্যা যাঁকে মনোনয়ন দেবেন আমরা তাঁকেই বিজয়ী করতে কাজ করবো।
অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী ঢাকা কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ বলেন, আমি শাহরাস্তিতে যতবার এসেছি, ততবারই দিখেছি আপনাদের মাঝে ভীতি ও হাহাকার। আমরা আপনাদের ভীতি দূর করে দেবো। কুচক্রি মহল থেকে সজাগ থাকবেন। কোনো প্রকার সন্ত্রাসীর স্থান শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জে হবে না।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আঃ রশিদ মজুমদার, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, আলী আশ্রাফ দুলাল, শিক্ষাবিদ ড. মোস্তফা কামাল, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ মুন্সি, শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সফিউল আলম স্বপন, হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খোকন, ছাত্রলীগ নেতা হোসেন মীর, শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন তুষার, মাহবুব আলম চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন পাটওয়ারী।
আলোচনা সভা শেষে একটি বিশাল বিজয় র্যালী বের হয়। র্যালীটি কালিয়াপাড়া থেকে শুরু হয়ে শাহরাস্তি গেইট, উপলতা, ঠাকুরবাজার ও কালীবাড়ি বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে নিজ মেহের উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়।