ধান কাটতে না যাওয়ায় দিনমজুরকে মারধর ; অভিমানে আত্মহত্যা!
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের হাইমচরে এক প্রভাবশালীর জমিতে ধান কাটতে না যাওয়ায় নুরুল ইসলাম বেপারীকে (৬৫) বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবশ্য পরে অভিমানে তিনি কীটনাশক পান করে আতহত্যা করেছেন। ঘটনাটি ঘটে হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের শেখকান্দি গ্রামে। শুক্রবার দুপুরে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান নুরুল ইসলাম বেপারী। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর (শনিবার) দুপুরে ২টার দিকে নুরুল ইসলাম পাশর্^বর্তি সৈনিককান্দি বাড়ির শাহজাহান সৈনিক ও তার ছেলে মামুন সৈনিক অর্তকিত ভাবে হামলা চালায়। এসময় তাকে পিটিয়ে বাড়ির পাশে সাঁকুর নিচে ফেলে রাখে। তার ডাকচিৎকারে আশপাশের মানুষজন উপস্থিত হলে কেউ যেন তাকে উদ্ধার না করে বলে হুমকি দেয় শাহজাহান ও মামুন। অবশ্য খবর পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার মমতাজ বেগমের স্বামী রাজ্জাক সিপাহী তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে পল্লী চিকিৎসক দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে নুরুল ইসলামের স্ত্রী কমলা বেগম ও ছেলে মাইনুদ্দিন বেপারী তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। নুরুল ইসলাম রাতের কোনো এক সময় শারীরিক ব্যাথায় ক্ষোভ ও অভিমানে কীটনাশক পান করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে চারদিন চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় তিনি মারা যান।
নুরুল ইসলামের বড় ছেলে মাইনুদ্দিন বেপারী জানান, আমরা পরের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার বাবাও দিন মজুরের কাজ করে। ঘটনার আগের দিন শাহজাহান বাবাকে তার জমিতে ধান কাটতে বলে। কিন্তু বাবা আগেই অন্যের জমিতে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। তাকে নিষেধ করায় উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ভাবে হামলা চালায়।
নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সরদার জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি। নুরুল ইসলাম নিরীহ মানুষ। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ সুমন মিয়া জানান, প্রাথমিক ভাবে আমরা জেনেছি শাহজাহান নুরুল ইসলামের কাছে কিছু টাকা পাবেন। নুরু সে টাকা দিতে না পারায় শাহজানের জমিতে ধান কেটে টাকা পরিশোধ করতে বলে। কিন্তু নুরু নগদ টাকা পেতে অন্যের জমিতে কাজ করছিলো। পরের দিন শাহজাহান তাকে পেটায়। রাতে তিনি কীটনাশক পান করেন। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে শাহজাহান ও মামুন এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। তাই তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।