শাহরাস্তির রুমা হত্যা মামলায় চাচীসহ দুইজনের মৃত্যুদন্ড
শাহরাস্তি প্রতিনিধি ॥
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার পূর্ব উপলতা গ্রামে ভাতিজি রুমা আক্তার (২২) কে শ^াসরোধ করে হত্যা করার অপরাধে চাচি জান্নাতুল ফেরদৌস মায়া (৪০) ও জহিরুল ইসলাম (৪৫) কে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) দুপুর সোয়া ১টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মায়া উপজেলার পূর্ব উপলতা গ্রামের মৃত পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী এবং জহিরুল ইসলাম একই গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। জহিরুল পেশায় ইলেকট্রিসিয়ান। আর হত্যার শিকার রুমা আক্তার ওই বাড়ী আনা মিয়ার কন্যা।
মামলার বিবরণে জানাযায়, রুমা আক্তার ঘটনার প্রায় দশ বছর পূর্বে চাচি মায়ার সাথে চাচার চাকুরীস্থল সিলেটে একত্রে থাকতেন। রুমাকে তারাই লালন পালন করতেন। ২০১৫ সালে চাচা হুমায়ুন কবির মারা যান। এরপর মায়া বাড়ীতে এসে ঘর তৈরী করে বসবাস করেন। এখানেও রুমা তার চাচীর সাথেই থাকতেন। এরই মধ্যে বাড়ী নির্মাণ করতে গিয়ে আসামী জাহিরুল ইসলামের সাথে মায়ার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা পরিবার ও বাড়ির লোকজন খারাপ চোখে দেখতেন। ঘটনার রাত ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ রাত ২টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে চাচীকে জহিরুল ইসলামের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলার কারণে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। ভোরে মায়া নিজেই রুমার পিতা-মাতাকে ডেকে এনে তার মেয়ে স্টোক করে মারাগেছে বলে জানায়। পরে তাকে দাফন করার জন্য গোসল দিতে গেলে শরীরের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এতে রুমার পিতার সন্দেহ হলে বিষয়টি শাহরাস্তি থানায় অবহিত করেন।
এই ঘটনায় ওইদিন রাতে রুমার পিতা আনা মিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস মায়া ও জহিরুল ইসলামকে আসামী করে শাহরাস্তি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করার জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহরাস্তি থানার তৎকালীন সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল মান্নান ২০১৬ সালের ২৫ আগষ্ট আদালতে চাজশীর্ট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আমান উল্লাহ জানান, মামলাটি দীর্ঘ দুই বছর চলমান অবস্থায় আদালত ১৬জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করেন এবং আসামীরা তাদের অপরাধ স্বীকার করায় প্যানাল কোডের ১৮৬০ এর ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়। সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ অভি এবং আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সেলিম আকবর ও চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ।