সিদ্দিকুর রহমান হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন
নজরুল ইসলাম আতিক:
ড্রামের ভেতরে ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় পাওয়া মৃত সিদ্দিকুর রহমান হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে চাঁদপুর জেলা পিবিআই। এবং হত্যাকারী সারওয়ার আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে হত্যাকারীর সহযোগীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানায় পিবিআই।
১৮ নভেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় চাঁদপুর জেলা পিবিআই এর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে হত্যা মামলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পিবিআই চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শংকর কুমার। প্রেস কনফারেন্সে তিনি জানান, গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানাধীন টামটা দক্ষিণ ইউনিয়ন রাজাপুরা গ্রামের মোহাম্মদ হোসেনের বাড়ির নিকট চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে তালাবদ্ধ অবস্থায় নীল রংয়ের ড্রাম দেখা যায়। দুই থেকে তিন ঘন্টা ড্রামটি একই স্থানে পড়ে থাকে। স্থানীয় লোকজনের এতে সন্দেহ তৈরি হয়। পরে তারা চাঁদপুর পিবিআইকে বিষয়টি অবহিত করে। পিবিআই ঘটনাস্থলে গিয়ে ছায়া তদন্ত ও ক্রাইমসিন সংক্রান্ত কাজ শুরু করে। ড্রাম থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহের মাথা, নাক, গাল, গলা, দেহের সামনে-পিছনে ধারালো অস্ত্র দ্বারা কাটা যখম ছিল। ওই দিন রাত তিনটা লাশের পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই চাঁদপুর।
পরবর্তীতে তদন্তের মাধ্যমে জানা যায়, ১০ ফুট রাস্তার জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হয় মৃত সিদ্দিকুর রহমান। তার বাড়ির ঠিক পিছনে ছিল হত্যাকারী সারোয়ার আলম এর বাড়ি এবং সে বাড়ি থেকে বের হতে ১০ ফুট জায়গা রাস্তার জন্য দাবি করলে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো। এবং তার এই অযৌক্তিক দাবি নিয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয় এক পর্যায়ে স্থানীয় এক সালিশ বৈঠকে মৃত সিদ্দিকুর রহমানের পরোচনায় তাকে নাকে খত দিতে হয় এবং এতে সে তীব্র অপমানিত হয়। সেই থেকেই আসামি সারওয়ার মৃত সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সে তার ছোট ভাই নূরে আলম এর মাধ্যমে একটি বেনামী সিম সংগ্রহ করে। ঘটনার আগের দিন অন্য পরিচয়ে সিদ্দিকুর রহমানকে ইলেকট্রিক্যাল কাজের জন্য ফোন দেয়। এবং সিদ্দিকুর রহমান সেখানে আসলে হত্যাকারীর সহযোগী তাকে একটি রুমে নিয়ে যায় এবং সাথে সাথে তার হাত পা বেধে ধারালো ছোরা, ক্ষুর, ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত এবং কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। পরে একটি পিকআপ ভ্যান ভাড়া নিয়ে লাশ কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর শাহরাস্তি এনে রাস্তার পাশে ফেলে তারা স্থান ত্যাগ করে। এবং আসামী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা আদালতে ১৬৪ ধারায় মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।