কচুয়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান॥ মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি তরুণী

 In কচুয়া উপজেলা, চাঁদপুর

মাইন উদ্দীন সবুজ, কচুয়া:

কচুয়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করার তরুণী মার খেয়ে অবশেষে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী মনি আক্তারকে মঙ্গলবার দুপুরে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মনি আক্তার কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সে মনি আক্তার একই উপজেলার নুরপুর গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে। এ সংক্রান্ত একটি রির্পোট গত ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক শপথ পত্রিকায় প্রকাশ হয়।
জানা যায়, হাসপাতালের বেডে আহত মনি আক্তার জানান ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কচুয়া চাপাতলী গ্রামের মৃত আলী আহমেদের ছেলে সুজনের সাথে তার রহিমানগর সুরমা বাস কাউন্টারে পরিচয় হয়। তারপর থেকে মোবাইলে কথোপকথনের মাধ্যমে দুজনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। শুরু হয় তাদের দুজনের প্রেমের পথ চলা। সুজন তাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে মাঝে মাঝে দুজন ঘুরে বেড়ানো থেকে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হতে থাকে।
মনি আক্তার জানায়, চলতি বছরের গত ৬ ফেব্রুয়ারি সুজন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে ভুলিয়ে-ভালিয়ে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর সুজন সটকে পড়তে চায়। এমনকি বিয়ে করতে অস্বীকার করে। বাধ্য হয়ে আমি গত ১২ ডিসেম্বর শনিবার দুপুর ১২ টায় চাপাতলী প্রেমিক সুজনের বাড়িতে বিয়ের দাবি নিয়ে অবস্থান করি। সুজন এবং তার দুই ভাতিজি ইসমা আক্তার, শারমিন আক্তার, ও তার ভাই লিটন, মাসুদ, ভাগিনা মিলনসহ পরিবারের সবাই মিলে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। শারীরিক নির্মম নির্যাতনে মনি আক্তার গুরুতর আহত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে বাড়ির অন্য লোকজন তাকে অচেতন অবস্থায় রহিমানগর বেসিক প্রাইভেট হাসপাতালে রেখে চলে যায়। পরে এমন ঘটনার খবর পেয়ে আহতের পরিবারের লোকজন শাহরাস্তি থানা পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ তাকে সেখান থেকে কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরবর্তীতে তাকে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানেও তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য আড়াই,শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালের চতুর্থ তলায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মনি আক্তার আরো জানায়, তার প্রেমিক সুজন একইভাবে আরও একাধিক মেয়ের সাথে এভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে তাদের জীবন নষ্ট করেছে বলে তার অভিযোগ। এমন ঘটনার জন্য ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী মনি আক্তার তার জীবনের নিরাপত্তার জন্য চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছেন।
এ বিষয়ে প্রেমিক সুজন হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে সে জানায়, তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছে এবং মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে ঠিক। কিন্তু আমাদের মাঝে প্রেমের কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তাকে বিয়ের আশ্বাসও দেই নি। তাকে বিয়ে করার জন্য সে প্রায় সময় আমাদের সাথে ঝামেলা করতে ঘটনার দিন সে বিয়ের দাবি নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসার পথে আমার এলাকার মহিলারা তাকে ধরেছে। তাকে আমরা কেউ কোন মারধোর করে নি আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দিয়েছে তা মিথ্যে বানোয়াট।

Recent Posts

Leave a Comment