গণশুনানিতে বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবি
বিদ্যুতের পাইকারি দাম প্রতি ইউনিটে ৭২ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক বলে মনে করছেন ভোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।
আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি দামে তেল কিনে, ভর্তুকিকে লোন বিবেচনা করে ও ব্যয়বহুল জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
তাদের মতে, বাড়তি ও অযাচিত ব্যয় বাদ দিলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে উল্টো দাম কমবে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, ইউনিট প্রতি ৭২ পয়সা দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব করা হয়েছে সেটি অযৌক্তিক।
তার মতে, উল্টো এই দাম ইউনিটপ্রতি ৫ পয়সা কমানো উচিত।
একইসঙ্গে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটিও পিডিবির প্রস্তাবে একমত হতে পারেনি। তারা পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৭২ পয়সা না বাড়িয়ে তা কমিয়ে ৫৭ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
সোমবার রাজধানীর কাওরান বাজারে টিসিবি মিলনায়তনে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য আয়োজিত ধারাবাহিক গণশুনানির প্রথম দিনে এসব সুপারিশ পাওয়া গেছে।
শুনানিতে পিডিবির উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে প্রতি ইউনিট পাইকারি বিদ্যুতের গড় সরবরাহ ব্যয় ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের হিসাবে পিডিবি পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৪ টাকা ৮৭ পয়সায় বিক্রি করে। এতে দেশের একক পাইকারি বিদ্যুৎ ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পিডিবির ইউনিটপ্রতি আর্থিক লোকসান ৭২ পয়সা।
চলতি অর্থবছর বা ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে পিডিবি পাইকারি বিদ্যুতের প্রাক্কলিত সরবরাহ ব্যয় ধরেছে ইউনিটপ্রতি ৫ টাকা ৯৯ পয়সা। এ হিসেবে ইউনিটপ্রতি লোকসান হবে ১ টাকা ৯ পয়সা। এই বিপুল আর্থিক ক্ষতি সমন্বয় করার জন্যই পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো উচিত বলে গণশুনানিতে দাবি করেন পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ।
গণশুনানির সভাপতিত্ব করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম।
শুনানিতে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশন সদস্য রহমান মুরশেদ, মাহমুদউল হক ভুইয়া, আব্দুল আজিজ খান ও মিজানুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক এ কে মাহমুদ, সদস্য কামারুজ্জামান, গণসংহতির জুনায়েদ সাকী, সিএনজি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব হাসিন পারভেজসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ভোক্তা প্রতিনিধিরা।