সরেজমিনে চৌমুহনীতে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কারিগরদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছে পূজার মণ্ডপ তৈরির কাজে নিয়োজিত কারিগর ও তাদের সহযোগীরা। এখানে প্রতিমার চেয়ে ভিন্ন আদলে তৈরি করা মণ্ডপগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক একটি মণ্ডপ তৈরিতে বিগত সময়ে বাজেট ছিল ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা। এবার তার চেয়ে বেশি বাজেট করা হয়েছে। দেবী দুর্গার ৭১ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বাজেট দেওয়া হয়েছে।
চৌমুহনী কলেজ রোডের রামেন্দ্রসাহার বাড়ির সামনে বিশাল আকারের ৭১ ফুট দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত দেখা গেছে কারিগরদের। নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে ব্যস্ত সবাই। দিনে-রাতে সমান তালে চলছে কাজ। দম ফেলার একটু সময় নেই। কেউ কাঠ কাটছেন, কেউবা বাঁশ। আবার কেউ মাটি ও সিমেন্ট দিয়ে দুর্গাসহ অন্যান্য প্রতিমার অবয়ব তৈরি করছেন।
৭১ ফুট দীর্ঘ দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন শরীয়তপুর থেকে আসা প্রতিমা কারিগর অমল কৃষ্ণ পাল। তিনি জানান, গত ২০ বছর ধরে তিনি নোয়াখালীতে প্রতিমা তৈরির কাজ করলেও এবারই তিনি এই বিশাল আকারের প্রতিমার তৈরির কাজ করছেন। ১৯৭৪ সালে ছাত্রজীবন থেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করলেও এটি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রতিমা।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এরআগে বাংলাদেশের কোথাও এত বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরি করা হয়নি। ১২ জন সহযোগী ও কারিগর নিয়ে গত আড়াই মাস ধরে এ কাজ করছেন তিনি। পূর্ণাঙ্গ প্রতিমা তৈরি করতে পূজার আগ দিন পর্যন্ত সময় লাগবে।
বিজয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ রনি কুমার সাহা জানান, ভারতের দেশ প্রিয় পার্কে গত বছর ৮৭ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা তৈরি করা হলেও বাংলাদেশে এই প্রথম ৭১ ফুট দেবী মায়ের প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। এবার দেবী দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে বাজেট ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে মণ্ডপ এবং লাইটিং খরচ রয়েছে। এছাড়া আরো অন্যান্য খরচও রয়েছে।
নোয়াখালী জেলা পূজা মণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর চন্দ্র শীল জানান, জেলায় এবার ১৫৮টি পূজা মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। জেলার সর্ববৃহৎ প্রতিমা তৈরি হচ্ছে বেগমগঞ্জে বিজয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে।
নোয়াখালী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুব্রত কুমার দে জানান, নোয়াখালী জেলায় ১৫৮টি পূজা মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। আর এজন্যে সোমবার জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে পূজার প্রস্তুতি কমিটি হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা সভা শেষে জানানো হবে।