হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর পর মামলার রায়, আসামির ফাঁসি

 In আইন আদালত
প্রায় ১৬ বছর আগে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে স্ত্রী ও এক মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যার দায়ে আবুল কালাম (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আবুল কালামকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন আদালত।

রোববার দুপুরে বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।

আসামি পলাতক থাকায় বিচারক তার অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। আবুল কালাম মোরেলগঞ্জ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের আব্দুল জব্বার হাওলাদারের ছেলে।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) শরৎচন্দ্র মজুমদার বলেন, গুলিশাখালী গ্রামের মো. আবুল বাশারত হাওলাদারের ছেলে স্থানীয় গুলিশাখালী হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র মশিউর রহমান আবুল কালামের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত।

২০০১ সালের ৭ অক্টোবর রাতে আবুল কালাম তার স্ত্রী সুলতানা ইয়াসমিনকে ধারালো দা দিয়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় ঘরে থাকা মশিউর তা দেখে ঠেকাতে গেলে গৃহকর্তা আবুল কালাম দা দিয়ে তার মাথা ও ঘাড়ে কোপ দেয়। এতে আবুল কালামের স্ত্রী সুলতানা ইয়াসমিন (২৫) ও লজিংয়ে থাকা মাদ্রাসাছাত্র মশিউর রহমান (১২) ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এদিকে ঘটনার রাতেই আবুল কালাম তার তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন তার বাবা ও ভাইয়েরা মিলে তার স্ত্রী এবং ওই মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা করেছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আবুল কালামের শিশুসন্তান পুলিশকে বলে তার বাবা তার মাকে হত্যা করেছে। ওই শিশুর ভাষ্য অনুযায়ী, পরদিন সকালে হত্যায় ব্যবহার করা ধারালো দাটি উদ্ধার করে পুলিশ আবুল কালামকে আটক করে।

এ ঘটনায় ৭ অক্টোবর মশিউরের বাবা আবুল বাশার বাদী হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর আবুল কালামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শরৎচন্দ্র মজুমদার আরও বলেন, মূলত বাবা ও ভাইদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় তাদের ফাঁসাতে স্ত্রীকে হত্যা করে আবুল কালাম।

তিনি জানান, ঘটনার পর আটক হলেও জামিন পাওয়ার পর থেকে আসামি আবুল কালাম পলাতক রয়েছেন।

মামলার দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রমে বিচারক ১৩ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই রায় দেন।

Recent Posts

Leave a Comment