সালমান শাহ হত্যা মামলা: নড়েচড়ে বসছে পিবিআই
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সোমবার বিকেলে এ বিষয়ে কথা হয় পিবিআইর বিশেষ পুলিশ সুপার (মেট্রো) আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমিও শুনেছি, ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এটা আমাদের তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগে আমাদের কাছে তেমন কোনো সূত্র ছিল না। কিন্তু ওই নারী দেশে নেই। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে ভিডিওটি সংগ্রহ করা হয়েছে।’
আলামতের অভাবে মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করা যাচ্ছে না, উল্লেখ করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সালমান শাহ হত্যা মামলায় কয়েক পর্যায়ে তদন্ত হয়েছে। অনেক আলামত নষ্ট হয়েছে। এ কারণে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে এ ভিডিওতে কিছুটা হলেও সংঘট ঘুচবে। অপেক্ষা করুন, সময়ই সব বলে দেবে।’
সোমবার সালমান শাহর বিউটিশিয়ান রাবেয়া সুলতানা রুবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওতে রাবেয়া সুলতানা রুবি বলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি, তাকে খুন করা হয়েছে।
রুবি জানান, সালমান শাহকে খুনে জড়িত ছিলেন তার স্বামী চীনা নাগরিক চ্যান লিং। যিনি চ্যান ওরফে জন চ্যান নামে বাংলাদেশে পরিচিত। ধানমন্ডির সাংহাই রেস্টুরেন্টের মালিক তিনি। চীনাদের দিয়ে সালমান শাহকে খুন করানো হয়। এতে জড়িত ছিল সালমান শাহর স্ত্রী সামিরার পরিবারও। প্রয়োজনে তিনি (রুবি) আদালতে সাক্ষী দিতেও প্রস্তুত।
রাবেয়া সুলতানা রুবি এখন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। তিনি সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ৭ নম্বর আসামি।
পিবিআই থেকে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর। রহস্যজনক এ মৃত্যুর ঘটনায় সে সময় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, এ অভিযোগ করে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। অবশ্য সিআইডির প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সালমান শাহর মা নীলুফার চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে নারাজির আবেদন করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন মিলে সালমান শাহকে হত্যা করতে পারে। একসময় মামলাটি তদন্ত শুরু করে র্যাব। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক র্যাব মামলাটি তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। এরপরই মামলাটি পিবিআইকে দেওয়া হয় তদন্তের জন্য।