ঢালীর ঘাটে মরা গরু ক্রেতার পেটে ॥ এলাকায় উত্তেজনা
শাহারিয়ার খান কৌশিক ॥ চাঁদপুর সদর উপজেলা ৮নং বাগাদী ইউনিয়নে ঢালী ঘাট বাজারে মরা গরুর গোশত বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। মরা গরুর গোশত ক্রেতাদের পেটে রয়েছে এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে অপরাধী গরু ব্যবসায়ী বিচারের দাবিতে এলাকার মানুষ ঐক্যবদদ্ধ হয়ে ঢালীঘাট বাজার এলাকায় মিছিল করে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গরুর গোশত বিক্রেতা লোকমান মিরাজ মরা গরু গোশত বিক্রি করার পর সন্ধ্যায় প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হওয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঢালীর ঘাট গাজী বাড়ির খোকা গাজী একটি গরু সোমবার রাতে অসুস্থ হয়ে মারা যায়।
এসময় গরুর ডাক্তার আরিফ কে খবর দিয়ে আনার পর সে গরুটি মৃত ঘোষনা করে। রাতেই মরা গরুটি খোকা গাজী পাশ্ববর্তী এলাকায় মাটি দেওয়ার জন্য নিয়ে যায়। এসময় রঘুনাথপুরের বসু বেপারী জানতে পেরে, গরুর মালিক খোকা গাজী কে কিছু টাকা দিয়ে মরা গরুটি জবাই করে। পরে ঢালীর ঘাট বাজারের গরুর গোশত ব্যবসায়ী লোকমানের কাছে মরা গরুটি বিক্রি করে। লোকমান কিছু গোশত অপর ব্যবসায়ী মিরাজের কাছে বিক্রি করে। তারা মরা গরুর গোশত কম দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করায় সন্দেহ ঘনিভূত হয়। মরা গরুর গোশত খাওয়া কয়েকজন ক্রেতা জানায়, গতকাল সকালে গরুর গোশত ব্যবসায়ী মিরাজ ৩ কেজি গোশত মাত্র ৪০০ টাকায় বিক্রি করে। যার মূল্য বর্তমান বাজারে ১৩৫০টাকা। এছাড়া তারা মরা গরুর গোশত তারাহুরো বিক্রি করার জন্য অনেক ক্রেতাদের বাকীতে দিয়েছে। গরুর গোশত কম দাম বাকীতে দেওয়ায় ক্রেতাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরে বিকেলে মরা গরুর প্রকৃত মালিক খোকা গাজী ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার পর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হয়। এব্যাপারে ফজল গাজী জানায়, ঘটনার দিন রাতে খোকা গাজীর গরুটি মারা যাওয়ার পর সেটি মাটি দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। পরে তা বিক্রি করার পর গোশত ব্যবসায়ী সেগুলো ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে। গরুর মালিক খোকা গাজীর পাশের বাড়ির হাজী মোঃ খান জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় নামায পড়ে
খোকা গাজীর বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে তার স্ত্রী ঘরে বসে কান্নাকাটি করতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলেন রাতে গরুটি মারা গেছে। গরু মারা যাওয়ার পর সেটি পাশ্ববর্তী এলাকায় নিয়ে মাটি দেওয়া হয়েছে। মরা গরু বিক্রি করার খবর এলাকায় মানুষ জানতে পেরে গরুর মালিক খোকা গাজীকে জিজ্ঞাসা করলে সে বসু বেপারীর কাছে বিক্রি করেছে বলে জানায়। এদিকে মরা গরুর গোশত খেয়ে অনেক ক্রেতা অসুস্থ হয়ে পড়েছে এমন খবর এলাকা ছড়িয়ে পড়েছে। মরা গরু বিক্রেতা লোকমান ও বসু বেপারী এলাকা ছেড়ে পলাতক রয়েছে। অন্য গরুর গোশত বিক্রেতা মিরাজকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশ কে খবর দেয়। এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বাজার কমিটির সভাপতি খোকন মহুরী, সাধারণ সম্পাদক শরীফ হাওলাদার, সদস্য আলমগীর তালুকদার সহ কয়েকজন দালালচক্র চেষ্টা চালিয়ে যায়। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে পত্রিকায় এই সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তারা উৎকুচের বিনিময়ে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। মরা গরুর গোশত বিকি করাকে কেন্দ্র করে ঢালী ঘাট বাজারে
যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। গরুর গোশত বিক্রেতা মিরাজের দোকানের সামনে এসে এলাকাবাসী বিক্ষোপ করে ও তাদের শাস্তি কামনা করেন।