ভারত বধ করে ওডিআই র্যাংকিং এ ৭ উঠে এলো টাইগার বাহিনী
ক্রীড়া প্রতিবেদক: চাঁদনিউজটোয়েন্টিফোর.কম ভারতকে ৭৯ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। অভিষেক ম্যাচেই মোস্তাফিজুর রহমান ৫ উইকেট নিয়ে পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন। এছাড়া তাসকিন ও সাকিব দুইটি করে এবং অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা একটি উইকেটা নিয়ে বিজয় নিশ্চিত করেন। এর আগে ১৫ ওভার পরও কোনো উইকেটের দেখা পায়নি টাইগার বোলাররা। তবে, দলীয় ১৬তম
ওভারে তাসকিনের শেষ বলে ধাওয়ান উইকেটের পেছনে আবারো ক্যাচ তুলে দেন। এবার আর ভুল করেন নি মুশফিক। ব্যক্তিগত ৩০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন ধাওয়ান। ইনিংসের নবম ওভারে রুবেল হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন শিখর ধাওয়ান। তবে, মুশফিকের হাত ফসকে বল বেড়িয়ে গেলে জীবন পান ধাওয়ান। পরের ওভারে মাশরাফির বলে আবারো উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ধাওয়ান। আম্পায়ারও আউটের সিদ্ধান্ত দেন। উইকেট থেকে বেড়িয়ে যান ভারতীয় ওপেনার। কিন্তু, এবারো মুশফিকের হাত ফসকে বল বেড়িয়ে যায়। বল কুড়িয়ে উইকেট ভেঙে দিলেও আম্পায়ার পড়ে তার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। ধাওয়ান ফিরে যাওয়ার পর দ্রুতই মুশফিকের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন বিরাট কোহলি। তাসকিনের দ্বিতীয় শিকারে সাজঘরের পথ ধরেন কোহলি। দলীয় ইনিংসের ১৮তম ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে এক রান করা কোহলিকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন। তাসকিনের পর বাংলাদেশের আরেক তরুণ পেস তারকা মুস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন রোহিত শর্মাকে। টাইগারদের গলার কাঁটা হয়ে থাকা রোহিত ৬৩ রান করে মুস্তাফিজের বলে দিশেহারা হয়ে মাশরাফির হাতে ক্যাচ তুলে দেন। মুস্তাফিজের আরেকটি অসাধারণ ডেলিভারিতে সাজঘরের পথ ধরেন দারুণ ফর্মে থাকা আজিঙ্কা রাহানে। নাসির হোসেনের দারুণ এক ক্যাচে ব্যক্তিগত ৯ রান করে বিদায় নেন রাহানে। এরপর দলীয় ২৬তম ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে ভারতীয় দলপতি মহেন্দ্র সিং ধোনি উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হলে টিম ইন্ডিয়ার পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে। আউট হওয়ার আগে ধোনি করেন মাত্র ৫ রান। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ৩০৮ রানের টার্গেটে ভারতের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন রোহিত শর্মা এবং শিখর ধাওয়ান। স্বাগতিকদের বোলিং সূচনা করেন টাইগারদের বোলিং চমক মুস্তাফিজুর রহমান। এই প্রথম টাইগারদের স্কোয়াডে একসঙ্গে চার পেসার খেলছেন। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকারের উড়ন্ত সূচনা আর সাকিব, সাব্বির, নাসিরের দৃঢ়তায় প্রথম ওয়ানডেতে টাইগাররা সবক’টি উইকেট হারিয়ে ৪৯.৪ ওভারে ৩০৭ রান করে। তামিম ৬০, সৌম্য ৫৪, সাকিব ৫২, সাব্বির ৪১ আর নাসির ৩৪ রান করলে ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর দাঁড়ায়। এর আগে টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২৯৬ রান (২০১০ সালের জানুয়ারিতে)। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিকেল ৩টায় সফরকারী ভারতের বিপক্ষে বদলে যাওয়া টাইগার বাহিনী টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে। তামিম আর সৌম্যর ব্যাটে ভর করে মাত্র ৮০ বলে দলীয় শতক পার করে টাইগাররা। আউট হওয়ার আগে তামিমের সঙ্গে ১০২ রানের জুটি গড়েন সৌম্য। যা ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি। বৃষ্টির কারণে খেলা প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবারো শুরু হয়। এরপর টাইগারদের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল। ব্যক্তিগত ৬০ রান করে অশ্বিনের বলে রোহিত শর্মার তালুবন্দি হন তামিম। আউট হওয়ার আগে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধশতক হাঁকান দেশসেরা এ ওপেনার। দলীয় ১৪৬ রানের মাথায় টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর স্বাগতিকদের বেশ ভালো ভাবেই টেনে নিয়ে চলেন সাকিব-সাব্বির। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতকের দিকে ছুটতে গিয়ে ১৫ ওয়ানডে খেলা সাব্বির ব্যক্তিগত ৪১ রান করে বিদায় নেন। জাদেজার বলে বোল্ড হওয়ার আগে সাব্বির ৪৪ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান। ঘুরে দাঁড়িয়ে সাকিব-সাব্বির মিলে ৮৩ রানের জুটি গড়েন। সাব্বির রহমানের বিদায়ের পর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি গড়েন নাসির হোসেন। ভারতীয় বোলারদের কোনো সুযোগ না দিয়ে ব্যাট করতে থাকা সাকিব ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৯তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে উমেশ যাদবের লাফিয়ে উঠা বলে শট নিয়ে জাদেজার হাতে ধরা পড়েন। আউট হওয়ার আগে ৬৮ বলে ৫২ রানের একটি ইনিংস খেলেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। নাসিরকে সঙ্গে নিয়ে ৩৮ রানের জুটিও গড়েন সাকিব। সাকিব আল হাসান ফিরে গেলেও থেমে থাকেনি টাইগারদের রানের চাকা। নাসির হোসেন নিজের পুরোনো রূপে ফিরে ২৭ বলে তিন চার আর এক ছয়ে ৩৪ রান করেন। উমেশ যাদবের বলে জাদেজার তালুবন্দি হন নাসির। শেষ দিকে ব্যাটে ঝড় তুলে মাশরাফি খেলেন ২১ রানের ইনিংস। ভারতের হয়ে সাতজন বোলার বল করেন। ১০ ওভারে ৫১ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট পান অশ্বিন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার আর উমেশ যাদব। মোহিত শর্মা এবং রবীন্দ্র জাদেজা একটি করে উইকেট দখল করেন।