অবশ্য দলের গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী এমনিতেই কিছু রদবদল আসবে দলে। সম্প্রতি ওই কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের কার্য নিবাহী সংসদের সদস্য সংখ্যা ৭৩ থেকে বাড়িয়ে ৮১ জন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংখ্যা ১৫ জন থেকে বেড়ে ১৯, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৩ থেকে বেড়ে ৪, সাংগঠনিক সম্পাদক ৭ থেকে বেড়ে ৮ ও কার্যনির্বাহী সদস্য আরও দু’জন বাড়ছে।
এ প্রস্তাবের ফলে স্বাভাবিকভাবেই শীর্ষ পদগুলোতে কয়েকজনের পদোন্নতি হবে। আর তাদের স্থান পূরণে দেখা মিলবে নতুন মুখেরও। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সভাপতিণ্ডলীর ৩ সদস্য নূহ উল আলম লেনিন, এডভোকেট সাহারা খাতুন, সতীশ চন্দ্র রায়কে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান দেওয়া হতে পারে।
এক্ষেত্রে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিপু মনি, বিভিন্ন সম্পাদক পদে থাকা নেতাদের মধ্যে ২ জনকে ও ৩ কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খায়রুজ্জামান লিটনকে সভাপতিণ্ডলীর সদস্য হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে ৩ জনকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় সদস্য পদে অবনমন করা হতে পারে। এক্ষেত্রে বর্তমান কেন্দ্রীয় সদস্যদের মধ্য থেকে মির্জা আজম, নসরুল হামিদ, এস এম কামাল হোসেনসহ ৪ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, ৩ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের একজন পদাবনতি ও একজন পদোন্নতি পেলেও আরেকজন মাহবুব-উল আলম হানিফ স্বীয় পদেই বহাল থাকতে পারেন। আর এক্ষেত্রে দুই সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে।
এছাড়া ২ কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, জোনায়েদ আহমেদ পলককে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে।
তবে এবারের সম্মেলনে চমক হিসেবে আসবে তরুণদের অন্তর্ভুক্তি। প্রায় ২৫ জন তরুণ, যাদের অনেকেই ছাত্রনেতা ছিলেন; তাদেরকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু পরিবারের দুইজন সদস্য নতুন কমিটিতে নতুন মুখ হিসেবে স্থান পেতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আর দলের উপকমিটির সহ-সম্পাদক পদ থেকেও কয়েকজন ত্যাগী নেতা সরাসরি কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাবেন এবার।
এছাড়া সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোতে দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন নারী নেত্রীও এবার জায়গা পাবেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। মূলত নারী নেতৃত্বের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে এবার নারীদের পদায়নে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি।
তবে সূত্রগুলো জানিয়েছে, দলীয় সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কোনো পদেই কেউ চূড়ান্ত নন। যেকোনো সময় হিসাব পাল্টে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আসলে দলে কি ধরনের পরিবর্তন আসছে তা জানার জন্য সম্মেলন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এ বিষয়ে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট সাহারা খাতুন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ঠিক হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে। এর আগে কে কোন দায়িত্বে আসবেন তা বলা যাবে না।’