এ ছাড়া অনার্স শেষ করে পরিবারের হাল ধরতে তিনি আলহাজ আয়াজুর রহমান স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।
ছাতকের নতুনবাজার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও গোবিন্দগঞ্জ আবদুল হক স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বদরুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র হিসেবে অনার্স শেষ করে। তিনি শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
শবি সূত্রে আরো জানা গেছে, বছর চারেক আগে শাবির হলে দলবল নিয়ে হামলা চালায় বদরুল। এ সময় কয়েকটি কক্ষে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এর জের ধরে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি সদর উপজেলার জাঙ্গাইল এলাকায় তার ওপর হামলা হয়। হামলা-পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে নেতা বনে যান বদরুল। শাবি ছাত্রলীগ নেতা হওয়ায় তিনি চলাফেরায় আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করলেই তাকে মারধর করতেন।
সর্বশেষ সোমবার বিকেলে এমসি কলেজ মসজিদের পেছনে সরকারি মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় বদরুল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ এবং হামলাকারীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করে। এ ছাড়া আহত কলেজছাত্রীকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তার ভাই নূর আহমদ।
এদিকে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের ওপর হামলাকারী বদরুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
শাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ জানান, বদরুল আলম শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। তিনি ২০০৮-০৯ সেশনে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। মহিলা কলেজের ছাত্রীকে কোপানোর ঘটনায় বদরুল আলমের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। গত ছয়-সাত মাস ধরে বদরুল কোনো মানসিক সমস্যায় ছিল বলে মনে হয়। এ কারণে সংগঠন থেকে দূরে ছিলেন।
আহত কলেজছাত্রীর ভাই নূর আহমদ জানান, বদরুল একজন সন্ত্রাসী। সে বিভিন্ন সময়ে তার বোনকে উত্ত্যক্ত করত। খাদিজা প্রতিবাদ করায়ই সে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহ পরান (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল মুন্সি জানান, মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে।
ওসি আরো জানান, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বদরুল ও খাদিজার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি খাদিজা বদরুলকে এড়িয়ে চলতে শুরু করায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।