ছায়েদুলের পদত্যাগ দাবি, তোপের মুখে হানিফ

 In আইন আদালত, জাতীয়, দেশের ভেতর, প্রধান খবর, রাজনীতি, লিড নিউজ, শীর্ষ খবর

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ওই এলাকার এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগের দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটতরাজের কয়েকদিন পর মন্ত্রী উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা।

ওই কর্মসূচিতে মন্ত্রীর পদত্যাগের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেনের অপসারণ চান হিন্দুপ্রধান বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। ওই ঘটনায় বিক্ষোভ দেখাতে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের পর সড়ক অবরোধ করেন তারা।

সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল বলেন, ‘ঘটনা ঘটার কয়েক দিন পরে মন্ত্রী ছায়েদুল হক এলাকায় গিয়েছেন। তিনি যাওয়ার পরেও সেখানে আবার হামলা হয়েছে। এতেই বোঝা যায় তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’ এই ঘটনায় তিনি মন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগ দাবি করলে উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা সমস্বরে তার প্রতি সমর্থন জানান।

এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ তোপের মুখে পড়েছেন। রাজধানীর শাহবাগে নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির এবং বাড়িঘর ভাঙচুরের প্রতিবাদে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।

শুক্রবার দুপুরে শাহবাগে বিক্ষোভ চলাকালে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীরা তার গাড়িটি ঘিরে রাখেন। এসময় অনেক বিক্ষোভকারী হানিফের গাড়িতে লাথি মারেন। পরে মাহবুব উল-আলম হানিফ গাড়ি থেকে নেমে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘নাসিরনগরে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনার সঙ্গে যত বড় প্রভাবশালীই জড়িত থাকুক না কেন তাদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের মন্দির ও বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাটের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলকারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে শাহবাগ এলাকায় গিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরছিলেন মাহবুব-উল আলম হানিফ। বিক্ষোভকারীরা তার গাড়ি ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে তিনি গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়েছিলাম। শাহবাগে আসার পরে নাসিরনগরে হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী কিছু ছাত্র আমার গাড়ি রোধ করে। আমি গাড়ির ভেতরে ছিলাম। তারা দেখেনি। পরে আমি নেমে এসে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছি।’

পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মিছিল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়েছিল। এমন সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ সেদিক দিয়ে গেলে তার গাড়ি অবরোধ করা হয়।’

পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান।

Recent Posts

Leave a Comment