গলে গিয়ে স্মৃতিকাতর মুশফিক
শ্রীলংকার গল দুর্গে হানা দিয়ে এখনও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি কোনো সফরকারী দল। গল মানেই তো শ্রীলংকার রাজত্ব।
সেখানেই মঙ্গলবার শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টে শ্রীলংকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
লংকানদের প্রিয় মাঠে বাংলাদেশেরও অনেক সুখস্মৃতি রয়েছে। কাল সেখানে অনুশীলনে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে গেলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তার ডাবল সেঞ্চুরিটা যে এই মাঠেই। গল দুর্গকে পেছনে রেখে একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করে মুশফিক হয়তো ২০১৩ সালের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
মোরাতুয়ায় দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে স্বস্তি ও হতাশার মিশ্র অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশের। ব্যাটসম্যানরা যেমন রান পেয়েছেন তেমনি প্রস্তুতি ম্যাচে লংকান টেস্ট দলের একমাত্র খেলোয়াড় দিনেশ চান্দিমালকে আউটই করতে পারেননি সাকিব আল হাসানরা। স্পিনারদের কেউই সুবিধা করতে পারেননি সেখানে। তারপরও প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে শ্রীলংকার কন্ডিশন সম্পর্কে আগাম একটি ধারণা পেয়ে গেছে দল। শনিবার ম্যাচ ভেন্যু গলে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল।
এই মাঠে নেমেই নিজের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করে মুশফিক লিখেছেন, ‘হিস্টোরিক গল স্টেডিয়াম।’ শ্রীলংকার কাছে যেমন ঐতিহাসিক স্টেডিয়াম তেমনি বাংলাদেশের কাছেও তো কম কিছু নয়। এই মাঠেই তো দাপটের সঙ্গে খেলে ২০১৩ সালে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। মুশফিকের ২০০ রানের সঙ্গে মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৯০, সেঞ্চুরি করেছিলেন নাসির হোসেনও (১০০)। তাতেই বাংলাদেশ তুলেছিল ৬৩৮ রান। টেস্ট ক্রিকেটে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান। গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেও সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর এটি। আশরাফুলের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে মুশফিক গড়েছিলেন ২৬৭ রানের জুটি। এরপর ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং ২০১৬ সালে ওয়েলিংটনে আরও দুটি ঐতিহাসিক জুটি গড়েছে বাংলাদেশ। পরের দুটি জুটিতেও একটি করে ডাবল সেঞ্চুরি হয়েছিল। সবার আগে এই গলে ডাবল সেঞ্চুরির সামনে ছিলেন আশরাফুল। ১৯০ রানে আউট হয়ে যান তিনি। তবে ডাবল সেঞ্চুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। সময়ের সঙ্গে টেস্টে বাংলাদেশ এখন আরও অভিজ্ঞ হয়েছে। ২০১৩ সালের স্মৃতি আবার ফিরিয়ে আনতে পারলে হয়তো আরও একটি ইতিহাস রচনা হবে গলে!
গলে খেলা ২৮ টেস্টে স্বাগতিকরা ১৬টিতেই জিতেছে। সমান ছয়টি করে ম্যাচে তারা ড্র করেছে ও হেরেছে।
গলে সবচেয়ে বেশি রান জয়াবর্ধনের (২৩৮২)। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাঙ্গাকারার (১৯২১) ধারে কাছে যেতে এখনও অনেক বাকি দিনেশ চান্দিমালের। তিনিও এই মাঠে দারুণ খেলেন। গলে ৭ ম্যাচে ১২ ইনিংসে ৬৩.২০ গড়ে ৬৩২ রান করেছেন তিনি। আর প্রস্তুতি ম্যাচে ১৯০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে তো বাংলাদেশকে হুমকিই দিয়ে রেখেছেন। তবে মুশফিকও এই মাঠে ফিরিয়ে আনতে পারেন ২০১৩-র স্মৃতি!