মুফতি হান্নানের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ
মুফতি হান্নানের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ
প্রাণভিক্ষা চেয়ে জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এখন জেলকোড অনুযায়ী তার ফাঁসি কার্যকরের পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শনিবার সন্ধ্যায় তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাষ্ট্রপতি তার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আমরা জেলকোড অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যা নাগাদ এ বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশ পায়নি। তবে সব ধরনের প্রস্তুতি তাদের রয়েছে।
একজন ঊধ্বর্তন কারা কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হওয়ার বিষয়টি আমরাও শুনেছি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পাইনি। রোববার হয়তো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যাবে।’
গত ১৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করেন। এরপর গত ২২ মার্চ তাকে রিভিউ খারিজের রায় পড়ে শোনানো হয়।
এরপর ২৭ মার্চ মুফতি হান্নান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। গত বৃহস্পতিবার আবেদনটি খারিজ করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হওয়ায় এখন মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকরে আর বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন কারা কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় তার ফাঁসি কার্যকর করবে।
সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ কমপক্ষে ৪০ জন।
এ ঘটনায় ২০০৪ সালের ২১ মে কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
এরপর ৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারক সামীম মো. আফজাল রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের মধ্যে মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মুফতি হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি ও মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন।
পরে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়েও ওই তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।