ই-মেইলে স্মার্ট যোগাযোগের ৭ পরামর্শ

 In বিচিত্র

 

আপনার করা ই-মেইলের রেকর্ড থেকে যাবে, বহু বছর পরও তা নিয়ে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। তাই ভাষার বিষয়ে সচেতন থাকুন। ছবিটি প্রতীকী।ই-মেইল নিয়ে ঝামেলায়? ঠিকঠাক কাজ হচ্ছে না! ই-মেইলের যত ধরনের ভুল তার সবই করে ফেলেছেন অথবা বিচিত্র সব ভুলে ভরা ই-মেইল পেতে পেতে ক্লান্ত? পেশাগত বা ব্যক্তিগত খুব সাধারণ ভুলগুলো সংশোধন করা জরুরি। পাশাপাশি জেনে নিন স্মার্ট ও কার্যকর ই-মেইল যোগাযোগের কয়েকটি উপায়।

‘সাবজেক্ট’ হবে ছোট, আকর্ষণীয় ও প্রাসঙ্গিক
ই-মেইলের ‘সাবজেক্ট’ বা বিষয় লেখার সময় আপনি ভাবুন যে আপনার বার্তার একটা ‘শিরোনাম’ দিচ্ছেন। বিষয় দেখেই যেন প্রাপক মেইলটি খুলে পড়তে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিশেষত প্রাপকের সঙ্গে সম্পর্ক যদি এমন না হয় যে, প্রেরকের নাম দেখেই সে চিঠি পড়বে, তাহলে তো ‘সাবজেক্ট’ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ‘সাবজেক্ট’ না লেখাটা একটা মারাত্মক ভুল। কেননা বিষয় লেখা নেই এমন মেইলগুলো স্পাম-ফিল্টারে আটকে স্পাম বক্সে চলে যেতে পারে। আর, ‘ইম্পর্ট্যান্ট’ বা ‘হাই ইটস মি!’ ধরনের কিছু লেখা মানে স্পাম হিসেবে গণ্য হওয়ার ব্যবস্থা প্রায় নিশ্চিত করা।

প্রথম প্যারাতেই আকৃষ্ট করুন
পত্রিকার সংবাদের মতো করে ‘সাবজেক্ট’ যদি হয় শিরোনাম, তাহলে প্রথম প্যারা হলো সংবাদের ‘ইনট্রো’ বা সূচনা। ই-মেইল দীর্ঘ হওয়া উচিত নয় এবং তা গুরুত্ব ক্রমানুসারে সুন্দরভাবে সাজিয়ে লেখা প্রয়োজন। তাই প্রথম প্যারাতেই মূল বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত সার তুলে ধরতে হবে। তা না পারলে এমন হতেও পারে যে, ব্যস্ত প্রাপক পুরো চিঠি না-ও পড়তে পারেন।

এক চিঠিতে ‘কাজের কথা’ একটাই
ই-মেইলের উদ্দেশ্য যদি হয় প্রাপককে কোনো একটা কাজ করতে বলা, একটা কাজের তালিকা ধরিয়ে দেওয়া, কিংবা কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা, তাহলে তা শুরুতেই স্পষ্ট করুন। একসঙ্গে অনেক কিছু করতে বলা চিঠি অনেক সময়ই ব্যর্থ হয়। তবে, বিষয়টি যদি ‘কর্ম তালিকা’ ধরনের কিছু হয়ে থাকে তাহলে খেয়াল রাখুন যাতে সবকিছু একত্রে গুছিয়ে লেখা থাকে। একেক প্যারায় একেকটা করে কাজের কথা না বলে প্রথম প্যারাতেই বিষয়টি উল্লেখ করুন এবং নিচে ক্রমিক নম্বরসহ কিংবা টেবিলের মতো করে তালিকাটা দিয়ে দিন।

সংবেদনশীলতার দিকে খেয়াল রাখা
কোনো ই-মেইলে কাউকে এমন কোনো বার্তা দেওয়া ঠিক হবে না, যা আপনি তাঁকে ভয়েস মেইলে দিতে চাইবেন না। কিছু বিষয় থাকে আমরা টেলিফোন আলাপে বা সামনাসামনি কথা বলার সময়ই বলি, ভয়েস মেইলে দিতে চাই না। ই-মেইলও ঠিক তা-ই। যে কথা বা সংবাদ শুনে প্রাপক অতি-সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারেন, এমন কিছু ই-মেইলে জানানো ঠিক হবে না। এমনকি এটা কারও মৃত্যুসংবাদও হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ফোনে অপর প্রান্তের মানসিক অবস্থা এবং তিনি কেমন পরিপার্শ্বে আছেন, তা জেনে নিয়েই বলা উচিত।

ভাষা ব্যবহারে সচেতন হোন
আবেগপ্রবণ হয়ে বা রেগেমেগে একাকার অবস্থায় ই-মেইল লিখতে বসবেন না! আর কখনোই তড়িঘড়ি করে ‘সেন্ড’ বাটনটিতে ক্লিক করে বসবেন না! চিঠিটা পাঠানোর আগে আরও একবার পুরোটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আর আমাদের তো এমন হয়ই যে, সামনাসামনি বলতে পারি না এমন কথাগুলো আমরা ই-মেইলে লিখে ফেলতে পারি। এ জন্যই সাবধান থাকতে হবে। আপনার করা ই-মেইলটার রেকর্ড থেকে যাবে, বহু বছর পরও তা নিয়ে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। তাই ভাষার বিষয়ে সচেতন থাকুন।

‘সিসি’ এবং ‘বিসিসি’
একটা মাত্র বার্তা লিখে বহু স্তরের বহু মানুষকে একই বিষয়ে ওয়াকিবহাল রাখার দারুণ মাধ্যম ই-মেইল। একটা সম্ভাব্য চাকরির ক্ষেত্রে এক ই-মেইলেই আপনি নিয়োগকর্তা, মানবসম্পদ কর্মকর্তা, রিক্রুটিং এজেন্ট এবং আপনাকে পরিচিতির সনদ দেওয়া ব্যক্তিকে প্রাপক তালিকায় যুক্ত করতে পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। কাকে কোন তালিকায় যুক্ত করা যাবে এবং কাকে যাবে না, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।

‘সিসি’ বা ‘কার্বন কপি’ পাঠানো হলে প্রাপকদের সবাই দেখবেন যে আর কে কে এই চিঠি পাচ্ছেন। আর ‘বিসিসি’ বা ‘ব্লাইন্ড কার্বন কপি’ পাঠানো হলে কেউই দেখবে না যে আর কাকে এই চিঠি পাঠানো হলো। কিন্তু ‘বিসিসি’ ব্যবহার যত কম করা যায়, ততই ভালো। একই চিঠি প্রাপককে না জানিয়ে অন্য এক বা একাধিক ব্যক্তিকে পাঠাতে মূল চিঠিটা পাঠানোর পর তা আলাদা আলাদাভাবে তাঁদের ‘ফরোয়ার্ড’ করুন।

ভুল সংশোধন করুন
বানান, টাইপের ভুল কিংবা ভাষার ব্যাকরণগত ভুলের বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। কেননা আপনি যত তাড়াহুড়ো করেই চিঠিটা লিখে থাকুন না কেন, তা কিন্তু প্রাপক বুঝবেন না। এমনকি আপনার টাইপ করার ভুলের কারণেও একটা বাক্যের অর্থ পাল্টে যেতে পারে। তাই এসব ছোটখাটো সাধারণ ভুলগুলোও অপর পক্ষকে আপনার সম্পর্কে একটা ধারণা দেবে। ভালো করে দেখে নিন ই-মেইলের ‘সম্বোধন’ ও ‘বিদায়’ সম্ভাষণ যথাযথভাবে লেখা হয়েছে কি না এবং আবারও দেখে নিন ই-মেইলে যুক্ত করা ছবি, ভিডিও, কিংবা ফাইলগুলো ঠিকঠাক নামে যুক্ত হয়েছে কি না। কোথাও ভুল থাকলে তা সংশোধন করেই মেইল পাঠান।

Recent Posts

Leave a Comment